পাশে দেখি মেহজাবীন কাঁদছে - Mehejabin News
আজ শেষ হচ্ছে ৪৯তম টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (টিফ)। এবারের উৎসবে ডিসকভারি বিভাগে নির্বাচিত হয়েছিল বাংলাদেশি সিনেমা ‘সাবা’। ৭ সেপ্টেম্বর উৎসবে ছবিটির প্রিমিয়ার হয়। টরন্টো থেকে উৎসবের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘সাবা’র নির্মাতা মাকসুদ হোসাইন–এর সঙ্গে কথা বলেছেন মনজুরুল আলম
এটা জীবনের সেরা একটা অভিজ্ঞতা। সিনেমাটি সবাইকে এতটা মুগ্ধ করবে, এটা অপ্রত্যাশিত ছিল। সিনেমা শেষ হওয়ার পর দেখি সবাই চুপ। গল্পের আবেগের সঙ্গে সবাই নিজেদের একাত্ম করতে পেরেছেন। পাশে দেখি মেহজাবীন (ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করা মেহজাবীন চৌধুরী) কাঁদছেন। তিনি আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে আছেন। আমার স্ত্রীও কাঁদছে, গল্পটা তাঁরই। পরদিন আরেকটি শো থেকেও ভালো সাড়া পাই। সারা বিশ্ব থেকে দর্শক, সাংবাদিক, সমালোচকসহ সিনেমাবোদ্ধারা ‘সাবা’র নানা আঙ্গিক নিয়ে কথা বলছেন; এটাও আমাকে মুগ্ধ করেছে।
স্বপ্নটা সব সময়ই দেখতাম। কিন্তু স্বপ্নটা দ্রুত বাস্তবে রূপ নেবে, সেটা ভাবিনি। কিন্তু সিনেমাটি নিয়ে যেখানেই গিয়েছি, সবাই খুবই প্রশংসা করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই চলচ্চিত্র পরিচালক ও সমালোচক ছিলেন। তখন মনে হয়েছিল, সিনেমাটি ভালো একটা জায়গায় যাওয়া দরকার। আমাদের আরও কিছু উৎসবে আমন্ত্রণ ছিল কিন্তু সব বাতিল করে টিফ–এ দিই। এটা আমাদের কাছে অনেক সম্মানের। সেই সম্মানটা আমরা পেয়েছি।
করোনার মধ্যে আমার ‘সাবা’ জার্নি শুরু, ২০২১ সালে। গল্পটি আমার পরিবারের। এর আগেও আমি তিনবার সিনেমাটি শুরু করতে গিয়ে পরে আর শুটিং করিনি। এবার চেয়েছিলাম, শুটিং শুরু করবই। পরে প্রি–প্রোডাকশন থেকে সিনেমাটি নিয়ে বুসান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ফিল্ম বাজারে গিয়েছি। শুটিং করেছি। সেই রাফ কাট দেখেও অনেক সাড়া পেয়েছি। সেটা আমাদের প্রত্যাশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা অনেক সময় নিয়ে রিহার্সাল করেছি, শুটিং করেছি।
গল্পের চরিত্রটি যেহেতু আমার চেনা, সে কারণে আমরা দীর্ঘ একটা সময় ধরে প্রধান চরিত্রকে খুঁজি। ১৫ জনের অডিশনও নিয়েছিলাম। পরিচিত ও নতুন মুখও ছিল। তারা কেউ কেউ অনেক মেধাবী। কিন্তু আমার মনের মধ্যে থাকা চরিত্রকে পাচ্ছিলাম না। প্রধান চরিত্র নিয়ে বিপাকেই পড়ে যাই। তখন আমার স্ত্রী হঠাৎ একদিন বললেন মেহজাবীনের কথা। তখন আমি মেহজাবীনের কিছু নাটক দেখি। মনে হয়েছিল, হতে পারে; তিনি ভালো অভিনয় করেন। মেহজাবীনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বসি। পরে মনে হয় ‘সাবা’কে পেয়েছি।
মেহজাবীন আমার তালিকায় ছিলেন না। কারণ, আমার মনে হয়েছিল তিনি নাটকেই বেশি ব্যস্ত, সিনেমা করেন না। আমার সিনেমা করবেন কি না, এ নিয়ে দোটানায় ছিলাম। পরে আমাদের দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আগেই তাঁকে বলেছিলাম ছয় মাস রিহার্সাল করব। সেভাবেই আমরা পরে অন্য চরিত্রগুলো কাস্ট করি। পরে ১৮ দিনে আমাদের শুটিং শেষ হয়।
আবুধাবিতেই আমি সিনেমার প্রেমে পড়ি। সেখানে হলিউড, বলিউডসহ বিভিন্ন দেশের প্রচুর সিনেমা দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। স্কুলে পড়তাম। তখন থেকেই আমার সেখানকার কালচারাল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। সিনেমার ওপর প্রচুর ম্যাগাজিন পড়তাম। এভাবেই বিখ্যাত সিনেমার পরিচালকদের সঙ্গে পরিচয়। সেখানে কোনো সিনেমার প্রদর্শনীই মিস করতাম না।