ইউরোপের চার দেশ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্তর্ভুক্ত চারটি দেশ বাংলাদেশ থেকে ছয়টি খাতে দক্ষ কর্মী নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য রোডম্যাপ প্রণয়নের কাজ চলছে এবং ইইউ প্রাথমিকভাবে ৩০ লাখ ইউরো আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। 

আগামী জুন মাসের মধ্যেই এই রোডম্যাপ চূড়ান্ত করে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে সরকারের প্রস্তুতি চলছে। গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। 

পররাষ্ট্র সচিব জানান, প্রায় দুই বছর ধরে বৈধ পথে অভিবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, "ইইউ ৩০ লাখ ইউরো সহায়তা দিচ্ছে, যা একটি পাইলট প্রকল্পের জন্য। আমাদের ধারণা, এ প্রকল্প সফল হলে ইউরোপের আরও দেশ বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেবে, কারণ বর্তমানে সবারই দক্ষ শ্রমিকের সংকট রয়েছে।"

২০২১ সালে ইইউ বৈধ পথে ইউরোপে অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করতে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি চালু করে। এর অধীনে বাংলাদেশসহ সাতটি দেশ রয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর নাগরিকদের দক্ষতা অর্জন ও কাজের সুযোগ প্রদান। 

এই কর্মসূচির অধীনে চারটি দেশ—জার্মানি, ইতালি, গ্রিস ও রোমানিয়া—বাংলাদেশ থেকে জাহাজ নির্মাণ, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, নির্মাণ, পর্যটন ও কৃষি খাতে দক্ষ কর্মী নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে কীভাবে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। 

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে দুটি প্রক্রিয়ায় কর্মী পাঠানো সফল হয়েছে। একটির মাধ্যমে জাপানে এবং অন্যটি দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানো হয়। ইউরোপের ক্ষেত্রেও এ ধরনের একটি মডেল তৈরি হতে পারে, যদিও নিয়োগের প্রক্রিয়া ইউরোপের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

এদিকে, দক্ষ শ্রমিকদের কোনো সনদ না থাকলে যাতে তা তাদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ইইউর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলাদেশের বড় বড় প্রকল্পে কাজ করা অনেক শ্রমিকের দক্ষতা রয়েছে, তবে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সনদ নেই। এ ছাড়া নার্সিং পেশায় প্রতি বছর ৩৫ হাজার স্নাতক ডিগ্রিধারী থাকলেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকায় তারা বিদেশে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না। এ বিষয়গুলো নিয়ে ইইউর সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।